সিলেট জেলা ও দায়রা আদালত পরিচিত
সিলেট জেলা আদালত সুরমা নদীর উপর নির্মিত পুরাতন ক্বীন ব্রীজ ও সার্কিট হাউজের উত্তর পাশে অবস্থিত। বর্তমানে এই জজশীপের বিচারিক, প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কার্যাবলী দুইটি পুরাতন একতলা, একটি তিন তলা , একটি পাঁচ তলা ও একটি দশ তলা ভবনে পরিচালিত হচ্ছে।
এই আদালতের কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হয় তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও রেকর্ড রূমে সংরক্ষিত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ১৮৬২ বা তৎপূর্ব থেকে এই আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তৎকালীন নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ১৮৬২ সালে এখানে ১ টি জেলা ও দায়রা জজ আদালত , ১ টি সাব-জজ আদালত ও ১ টি মুন্সেফ কোর্ট ছিল। ১৯৩০ সালে এখানে ১ টি অতিরিক্ত মুন্সেফ কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে সিলেটে ১ টি জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং এর অধীনস্ত ৪ টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ৪ টি যুগ্ম জেলা জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ১ টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, এবং ৪টি সিনিয়র সহকারী জজ ও ৮ টি সহকারী জজ আদালত রয়েছে।
২০১৩ সালে সিলেটে মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানগর দায়রা জজশীপে একটি মহানগর দায়রা জজ আদালত, একটি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এবং দু’টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত রয়েছে।
পাশাপাশি এখানে ১ টি বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত, ১ টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ১ টি জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, ১ টি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, ১ টি মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, ১ টি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, ১ টি শ্রম আদালত ও ১ টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল রয়েছ।
১ লা নভেম্বর, ২০০৭ খ্রিঃ সালে নির্বাহী থেকে পৃথক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি সৃষ্টির পর থেকে সিলেটে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে ১ টি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ১ টি অতিঃ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ১ টি বিদ্যুৎ আদালত এবং ৯ টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রয়েছে। তন্মধ্যে জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অবস্থান ঐ উপজেলায় যা ১৯৪৭ সালে জকিগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের সন্নিকটে একটি বাড়িতে রেসিডেন্সিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য আছে ১ টি চীফ মেট্রোপলিটন আদালত, ১ টি অতিঃ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৩ টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বাংলাদেশের সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ.এফ.এম. আহসান উদ্দিন চৌধুরী ১২-০২-১৯৬৫ খ্রিঃ থেকে ০১/১১/১৯৬৫ খ্রিঃ পর্যন্ত সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন। এই আদালতের সাবেক মাননীয় জেলা ও দায়রা জজদের মধ্যে জনাব মোঃ ইফতেখার রছুল, জনাব এম. এ. কুদ্দুস, জনাব মোহাম্মদ মারজিউল হক, জনাব কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, জনাব এ.এন.এম. বশির উল্লাহ এবং সর্বশেষ জনাব মোঃ বজলুর রহমান বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
সংকলনেঃ মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ (সিনিয়র সহকারী জজ), শ্যাম কান্ত সিন্হা (সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট), মুহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন (সহকারী জজ) এবং আবিদা সুলতানা মলি (জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট)।